যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ডে ছুরি হামলায় নিহত বাংলাদেশি নারী কুলসুমা আক্তার (২৭) হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তার স্বামী হাবিবুর রহমান মাসুম (২৬)। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ব্র্যাডফোর্ড ক্রাউন কোর্টে হাজির হয়ে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেন।
২০২৪ সালের ৬ এপ্রিল ব্র্যাডফোর্ডের ওয়েস্টগেট ও ড্রিউটন রোডের সংযোগস্থলে কুলসুমা ছুরিকাঘাতে নিহত হন। ঘটনার সময় তিনি ইফতারের আগে তার শিশুপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে খাবার কিনতে বাইরে বের হয়েছিলেন। কিন্তু আগে থেকেই ওঁত পেতে থাকা মাসুম ধারালো ছুরি দিয়ে তাকে একাধিকবার আঘাত করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে হামলার সময় শিশুটি অক্ষত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। ব্র্যাডফোর্ড ক্রাউন কোর্টে শুনানির সময় বাংলা দোভাষীর সহায়তায় হাবিবুর রহমান মাসুম তার বিরুদ্ধে আনা দুটি অভিযোগই স্বীকার করেন। বিচারক তার বিচার শুরু না হওয়া পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী সোমবার (৯ জুন) মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হবে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, কুলসুমার ওপর মাসুমের নির্যাতন দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মাসুম তাকে নিয়মিত অনুসরণ করতেন এবং মৃত্যুর হুমকি দিতেন। তিনি কুলসুমার অস্থায়ী বাসস্থানের আশপাশে ঘোরাফেরা করতেন, ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখাতেন। এতে কুলসুমা চরম আতঙ্ক ও মানসিক চাপে ভুগছিলেন।
নিহত কুলসুমা আক্তার (ডাক নাম শিউলী) ও হাবিবুর রহমান মাসুম বাংলাদেশের সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার বাসিন্দা। দুই বছর আগে মাসুম শিক্ষার্থী ভিসায় যুক্তরাজ্যে আসেন, আর কুলসুমা আসেন ডিপেন্ডেন্ট ভিসায়। প্রথমে তারা ওল্ডহামে বসবাস করলেও পারিবারিক কলহের কারণে বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। পরে কুলসুমাকে একটি সামাজিক সংস্থার সহায়তায় নিরাপদে ব্র্যাডফোর্ডে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু পুলিশের নিষেধাজ্ঞা ও বিচ্ছিন্ন থাকার নির্দেশ উপেক্ষা করে মাসুম গোপনে তার স্ত্রীর ওপর নজরদারি করতে থাকেন, যার পরিণতিতে ঘটল এই নির্মম হত্যাকাণ্ড।